অনলাইন ডেস্ক: নিজেকে বাছিরন বেওয়া (৯২) দাবি করা সেই বৃদ্ধাকে নিতে তার পরিবারের কেউ থানায় যাননি। যারা তাকে মা বলে দাবি করেছিলেন তারাও এখন ভুল বুঝতে পেরে রাখতে চাচ্ছেন না ওই নারীকে। যে কারণে সমাজ সেবা বিভাগের সহযোগিতায় ওই নারীকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠাতে পারে পুলিশ।
বুধবার (১১ মে) মৃত্যুর ৯ মাস পর এক নারী কবর থেকে উঠে এসেছেন এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে গাইবান্ধা শহরে আলোচনা শুরু হয়। সে সময় ওই নারীকে দেখতে শত শত মানুষ জেলা শহরের ডেভিড কোম্পানি পাড়ার বাসিন্দা মাজেদা বেগমের বাড়িতে ভিড় করেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি শান্ত করে এবং ওই নারীকে তাদের হেফাজতে নেন।
জানা গেছে, ডেভিড কোম্পানি পাড়ার আনিসুর রহমানের স্ত্রী বাছিরন বেওয়া প্রায় ৯ মাস আগে মারা যান। পরে আত্মীয়স্বজন ও এলাকাবাসী যথারীতি জানাজা শেষে গাইবান্ধা পৌর কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন করেন। গত দুদিন আগে মারা যাওয়া বাছিরন বেওয়ার সাদৃশ্যে এক নারীকে গাইবান্ধা রেল ষ্টেশন চত্বরে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। এমন খবরে বাছিরন বেওয়ার মেয়ে মাজেদা বেগম ওই নারীকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যান এবং তাকে মা দাবি করেন। এ সময় ওই নারীও নিজেকে বাছিরন বেওয়া দাবি করেন।
এদিকে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে বাছিরন বেওয়া জানিয়েছেন তিনি একজন ভবঘুরে ভিক্ষুক। .
পুলিশ জানায়, কয়েকদিন আগে রংপুরের পীরগাছা ষ্টেশনে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায় ওই নারীকে। কথার ভিত্তিতে পীরগাছা ষ্টেশন এলাকার লোকজন ওই নারীকে বাড়ি খুলনায় যাওয়ার জন্য গাইবান্ধামুখী একটি ট্রেনে তুলে দেন। তারপর এই ঘটনার জন্ম হয়।
রাতে মা’র মতো সাদৃশ্য নারীকে মা দাবি করা মাজেদা বেগম জানান, আমার মা দেখতে অনেকটা তার মতো ছিলেন। তাই ভুল বুঝাবুঝি হয়েছে। ওই নারী আমার মা না।
গাইবান্ধা পৌর কবরস্থানের গোড়খোদক টুলু মিয়া বলেন, বাছিরন বেওয়াকে যেখানে কবর দেওয়া হয়েছে সেই জায়গাটি স্বাভাবিক অবস্থায় রয়েছে। কাজেই জীবিত হয়ে কবর থেকে উঠে আসার ঘটনাটি সত্য হতে পারে না।
গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদুর রহমান জানান, লোকজনের ভিড় ঠেকানো যাচ্ছিলো না। সেজন্য ওই নারীকে আমরা হেফাজতে নিয়েছিলাম। ওই নারীর অভিভাবকদের খুঁজে পাওয়া গেলে তাদের হাতে তাকে তুলে দেওয়া হবে। তবে যদি তার কোনো আত্মীয়কে খুঁজে না পাওয়া যায় তাহলে সমাজ সেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে তাকে (নারী) বৃদ্ধাশ্রমে পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে।’
গাইবান্ধা সমাজ সেবা অধিদপ্তরের উপ পরিচালক ফজলুল হক জানান, বৃদ্ধাশ্রমগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। যেখানে জায়গা পাওয়া যাবে বৃদ্ধাকে সেখানে থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। বর্তমানে ওই বৃদ্ধা পুলিশ হেফাজতেই আছেন।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।